ঢাকাই চলচ্চিত্রের জনপ্রিয় চিত্রনায়ক সালমান শাহকে হত্যার কোনো আলামত পায়নি পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। পারিবারিক কলহের জের ধরেই তিনি আত্মহত্যা করেছেন বলে তদন্তে উঠে এসেছে।
আজ সোমবার দুপুরে ধানমন্ডির পিবিআই হেডকোয়ার্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান পিবিআই’র প্রধান বনজ কুমার।
তিনি বলেন, সালমান শাহর রহস্যজনক মৃত্যুর মামলার তদন্ত প্রতিবেদন চূড়ান্ত করা হয়েছে। তাকে হত্যা করা হয়েছে এমন কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি তদন্তে।
বনজ কুমার আরও বলেন, ‘আমরা সালমানের তখনকার স্ত্রী সামিরাসহ সন্দেহভাজনদের বক্তব্য নিয়েছি। সব মিলে এটিই প্রতীয়মান হয়েছে যে, পারিবারিক কলহ ও মানসিক যন্ত্রণা সইতে না পারায় আত্মহত্যা করেন সালমান শাহ।’
উল্লেখ্য, জনপ্রিয় নায়ক সালমান শাহর রহস্যজনক মৃত্যুর ২৩ বছর পেরিয়ে গেছে। দীর্ঘ এই সময়েও তার মৃত্যুর রহস্য উদ্ঘাটন হয়নি। এর আগে কয়েক দফা তদন্তে সালমান শাহের মৃত্যুকে আত্মহত্যা বলে উল্লেখ করা হলেও তা অদ্যাবধি মেনে নিতে পারেনি তার পরিবার ও ভক্তরা।
সর্বশেষ ২০১৬ সালের শেষ দিকে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) নতুন করে তদন্তভার দেওয়া হয়। সেই তদন্তের সূত্র ধরেই সোমবার তদন্ত নিয়ে কথা বলেন পিবিআই।
এর আগে গত বছরের ১ সেপ্টেম্বর পিবিআই সালমান শাহর রহস্যজনক মৃত্যু নিয়ে আদালতে মামলার ‘তদন্ত অগ্রগতি’ প্রতিবেদন দাখিল করে। তবে সেই প্রতিবেদনেও ‘উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি’র কোনো তথ্য দেয়নি।
১৯৯৬ সালের ৬ সেপ্টেম্বর রাজধানীর ইস্কাটন রোডে নিজের বাসা থেকে চিত্রনায়ক সালমান শাহর লাশ উদ্ধার করা হয়। ওই সময় এ বিষয়ে অপমৃত্যুর মামলা দায়ের করেন তার বাবা কমরউদ্দিন আহমদ চৌধুরী। পরে ১৯৯৭ সালের ২৪ জুলাই ছেলেকে হত্যা করা হয়েছে অভিযোগ করে মামলাটিকে হত্যা মামলায় রূপান্তরিত করার আবেদন জানান তিনি।
অপমৃত্যু মামলার সঙ্গে হত্যাকাণ্ডের অভিযোগের বিষয়টি একসঙ্গে তদন্ত করতে সিআইডিকে নির্দেশ দেন আদালত। ১৯৯৭ সালের ৩ নভেম্বর আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেয় সিআইডি। চূড়ান্ত প্রতিবেদনে সালমান শাহের মৃত্যুকে আত্মহত্যা বলে উল্লেখ করা হয়।
সিআইডির প্রতিবেদন প্রত্যাখ্যান করে তার বাবা কমরউদ্দিন আহমদ চৌধুরী রিভিশন মামলা দায়ের করেন। এরপর বেশ কয়েকবার একে আত্মহত্যা বলে আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন দেওয়া হলেও সালমানের পরিবার তাতে নারাজি আবেদন করে পুনঃতদন্ত চায়। এই মৃত্যুর ঘটনা হত্যা না আত্মহত্যা তা নির্ধারণে গত বছরের জানুয়ারি মাসে মামলাটি আবারও আদালতে ওঠে। তখন মামলাটি তদন্তে পিবিআইকে দায়িত্ব দেয় আদালত।
পাঠকের মতামত: